শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

কেন হয় কোমরব্যথা

স্বাস্থ্য ডেস্ক:
পিএলআইডি শব্দের অর্থ হচ্ছে প্রলাপ্স লাম্বার ইন্টার ভার্টিব্রাল ডিস্ক। প্রলাপ্স শব্দের অর্থ হচ্ছে সরে যাওয়া, লাম্বার শব্দের অর্থ হচ্ছে কোমর, ইন্টার শব্দের অর্থ হচ্ছে মাঝখানের, ভার্টিব্রা শব্দের অর্থ হচ্ছে মেরুদণ্ডের হাড়সমূহ এবং ডিস্ক শব্দের অর্থ হচ্ছে কুশন। সুতরাং প্রলাপ্স লাম্বার ইন্টার ভার্টিব্রাল ডিস্কের অর্থ হচ্ছে কোমরে অবস্থিত হাড়সমূহের মাঝের ডিস্কের স্থানচ্যুতি।

ডিস্ক বা কুশন দেহের মেরুদণ্ডের দুই হাড়ের মধ্যে অবস্থান করে। মানবদেহের মেরুদণ্ড লম্বায় পুরুষের ক্ষেত্রে ৭০ সেমি ও নারীদের ক্ষেত্রে ৬০ সেমি। মানবদেহের মেরুদণ্ডে ৩৩টি ভার্টিব্রা থাকে। দুই ভার্টিব্রার মধ্যে থাকে একটি করে ডিস্ক বা কুশন। সেক্রাম ও কক্রিস হলো ফিউজড বোন। ফলে এখানে কোনো ধরনের ডিস্ক থাকে না। ডিস্ক বা কুশন মানবদেহের মেরুদণ্ডের মধ্যে অবস্থান করে যেসব কাজ করে তা হলো

 দেহের নড়াচড়া বা মুভমেন্টের সময় মেরুদণ্ডের হাড়সমূহের ঘর্ষণ প্রতিরোধ করে।  প্রচণ্ড প্রেশারের সময় ওই এলাকার শক অ্যাবজরবার হিসেবে কাজ করে।  প্রতিটি ভার্টিব্রার মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ নড়া-চড়ায় সাহায্য করে।  অতিরিক্ত নড়াচড়া কোমরকে ক্ষতির হাত হতে বাঁচায়।  দেহের প্রতিদিনের স্বাভাবিক নড়াচড়ায় সহায়তা করে।

ডিস্ক প্রলাপ্স বলতে বোঝায় ডিস্ক বা কুশনের স্থানচ্যুত হওয়া বা সরে যাওয়া। ডিস্ক প্রলাপ্স মানবদেহের মেরুদণ্ডে হয়ে থাকে। এটি মেরুদণ্ডের ঘাড় ও কোমরের অংশে বেশি হয়। পিঠে ডিস্ক প্রলাপ্স হওয়ার পরিমাণ খুবই কম। কেননা পিঠের সম্মুখভাগ বার জোড়ারিব বা হাড় দিয়ে তৈরি করে, যাকে বুকের খাঁচা বলে। বুকের সম্মুখভাগে খাঁচা হওয়ার কারণে নড়াচড়ার পরিমাণ খুবই কম।

কারণ : কোমরে অতিরিক্ত প্রেশার বা চাপের কারণে। যেমন : রোড ট্রাফিক অ্যাকসিডেন্ট। ভারী বস্তা বহন করার সময় সঠিক নিয়ম না মানা বা হঠাৎ নিচু থেকে ভারী কোনো বস্তু সঠিক নিয়মে না টেনে মাথায় তোলার কারণেও এমনটা হতে পারে। কোমরের লিগামেন্টসমূহের সঠিক কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে যেমন : সঠিক নিয়মে না বসা বা দাঁড়ানোর কারণে এমনটা হয়। কোমরে অবস্থিত মাংসপেশিসমূহের শক্তি বা সাপোর্ট কমে যাওয়ার কারণে বা প্রয়োজনের তুলনায় কম বা বেশি কাজ করার জন্য। কোমরের মাংশপেশিসমূহের সংকোচনের ফলে। কোমরের টেনডনের ওভার স্ট্রেচ বা টান লাগার কারণে।

কাদের হতে পারে : ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারী ও পুরুষের হয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার হার নারীদের তুলনায় বেশি।

লক্ষণ : কোমরে ব্যথা অনুভব এমনকি ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যথার ফলে কিছুক্ষণ হাঁটার পর পা অসার হয়ে আসে। শোয়া অবস্থায় ব্যথা কম থাকে কিন্তু বসলে ব্যথা বাড়ে, দাঁড়ালে ব্যথা আরও বেশি হয়। মাঝে মাঝে পায়ের ব্যথার স্থানসমূহে জ্বালাপোড়া অনুভব হতে পারে।

আক্রান্ত স্থানে এক্স-রে ও এমআরআই করে রোগ নির্ণয় করা হয়।

মেডিসিন থেরাপি : এনএসএআইডি ড্রাগ, অ্যান্টিআলসারেন্ট ড্রাগ, মাসেল রিলাক্রজেন্ট ড্রাগ, ভিটামিনযুক্ত ড্রাগ, টেনশন ফ্রি ড্রাগ, ভিটামিন বি১ +৬ + ১২ যুক্ত ড্রাগ দেওয়া যেতে পারে।

মেকানিক্যাল থেরাপি : লাম্বার ট্রাকশন, ইউএসটি, প্যারাফিনওয়াক্র, ইনফ্রা রেডিয়েডিয়েশন, টেন্স, লেজার, শর্ট ওয়েভডায়াথারমি, আইএফটি দেওয়া যেতে পারে রোগের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে।

ম্যানুয়াল থেরাপি : মোবিলাইজেশন এক্সারসাইজ, ম্যাকেঞ্জি টেকনিক, ম্যানুয়াল থেরাপি, স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ, স্ট্রেন্থদেনিং এক্সারসাইজ, মাসাজ, আইসোমেট্রিক এক্সারসাইজ, হোল্ডরিলাক্স এক্সারসাইজ, স্টাটিক এক্সারসাইজ, ম্যানিপুলেশন ইত্যাদি, যা নির্ভর করবে রোগের অবস্থার ওপর। এ ছাড়া আকুপ্রেশার ও রিফলেক্রোলজি চিকিৎসা প্রয়োগ করা যেতে পারে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION